আনারস চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন


এই আনারস চাষ পদ্ধতি বাংলাদেশে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আনারস চাষ করা হয় ।মৌলভীবাজার, সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য টাঙ্গাইলের এবং চট্টগ্রাম মধুপুরে ব্যাপক আনারসের চাষ করা হয় । নরসিংদী, ঢাকা, কুমিল্লা, দিনাজপুর জেলাতে ও অনেক আনারস জন্মে।

তবে অনেক ধরনের প্রক্রিয়াজাত কৃত খাবার (জুস,জেলি , জ্যাম ইত্যাদি) তৈরির কাজে ব্যাবহার হওয়ার জন্য পৃথিবীর সর্বত্রই আনারসের একটি অনেক বেশি বিশেষ গুরুত্ব আছে। বাণিজ্যিক ফল হিসাবে ও আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে আনারস অনেক বড় একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল।

আনারস চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন

আনারস চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন আনারস হলো বর্তমানে বাংলাদেশে এটি একটি অর্থকরী ফসল। আনারস রপ্তানিপণ্য হিসাবে আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষ অবদান রাখছে। আনারসের জাত: বাংলাদেশে আনারসের তিনটি জাত দেখা যায়। যথা: হানিকুইন, জায়েন্ট কিউ ও ঘোড়াশাল।আনারসের উৎপাদন প্রযুক্তি: আনারসের প্রযুক্তিগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

মাটি ও জমি তৈরী  সম্পর্কে জানুন

দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি আনারস উৎপাদনের জন্য ভালো। জমি চাষ ও মই এমনভাবে দিতে হবে যাতে মাটি ঝুরঝুরা ও সমতল হয় এবং জমিতে বৃষ্টির পানি জমে না থাকে। আমাদের চারা লাগানো জন্য চাষ করা জমিতে ১৫ সেমি মত উঁচু ও ১ মিটার প্রশস্ত বেড তৈরি করে রাখতে  হবে।

এক বেড থেকে আর এক বেডের দূরত্ব হবে ৫০-১০০ সেমি। পাহাড়ের ঢালে আনারস চাষ করার জন্য এমন জমি নির্বাচন করতে হবে যা বেশি খাড়া নয়। পাহাড়ের ঢালু জমি কোনোক্রমেই চাষ এবং কোদাল ব্যাবহার করে মাটি বেশি আলগা করা যাবে না, কারণ শুধু আগাছা দিকে  ভালো ভাবে পরিষ্কার করতে হবে তার পর চারা রোপণের জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে।

চারা নির্বাচন ও তৈরি  সম্পর্কে জানুন

আনারস গাছের বংশবিস্তার অঙ্গজ পদ্ধতিতেই হয়ে থাকে। আনারস গাছে সাধারণত চার ধরনের চারা উৎপন্ন হয় যাদেরকে সাকার বা তেউড় বলা হয়। সাকার বা তেউড়ের বিবরণ নিম্নে দেওয়া হলোঃ

দুই ধরনের মাথায়  চারা উৎপন্ন হয়। ফলের মুকুট চারা উৎপন্ন হয় বলে মাথায় সোজা ভাবে যে চারাটি  তাকে মুকুট চারা বলেন । আর  চারা বের হয় চারার গোড়া থেকে তাকে স্কন্ধ চারা বা মুকুট স্লিপ বলে মুকুট  ।ফলের গোড়া বা বোঁটার উপর থেকে যে চারা বের হয় তাকে বোঁটা চারা বলে।

বোঁটার একদম নিচে বা মাটির একদম উপরে কাণ্ড থেকে যে ধরণ এর চারা বের হয় তাকে কাণ্ডের কেকড়ি বা পার্শ্বচারা  বলে। গোড়া থেকে গাছের মাটি একদম ভেদ করে যে সব চারা বের হয় তাকে গোড়ার ছুঁয়ে বা কেকড়ি   চারা বলে। আনারস চাষের জন্য ছুঁয়ে চারা ও পার্শ্বচারা সবচেয়ে ভালো।

চারা রোপণ  সম্পর্কে জানুন

মধ্য আশ্বিন হতে মধ্য অগ্রহায়ণ পর্যন্ত এই এক মাস আনারসের চারা রোপণের সঠিক সময়। সেচের ব্যবস্থা থাকলে চারা রোপণের সময় আরও এক / দেড় মাস পিছানো যায়। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৪০ সেমি বা চারা থেকে একদম চারার দূরত্ব হবে ৩০ থেকে ৪০ সেমি বজায় রেখে গাছ লাগাতে  হবে।

সার প্রয়োগ পদ্ধতি  সম্পর্কে জানুন

১। সার প্রয়োগ পদ্ধতির প্রথম কাজ হলো পরিমাণ নির্ধারণ। আনারসের জন্য গাছ প্রতি নিম্নোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।

সারের নাম

গাছ প্রতি সারের পরিমাণ (গ্রাম)

পচা গোবর

২৯০-৩১০

ইউরিয়া

৩০-৩৬

টিএসপি

১০-১৫

এমওপি

২৫-৩৫

জিপসাম

১০-১৫


২। (ক) গোবর, টিএসপি ও জিপসাম বেড তৈরির সময় মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
(খ) এমওপি এবং ইউরিয়া ও পটাশ, চারার বয়স ৪ থেকে ৫ মাস হলে ৫ কিস্তিতে প্রয়োগ করা লাগবে । সার মাটি তে  ভালো ভাবে জমি এর সাথে সুন্দর করে মিশিয়ে দিতে হবে।

অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা  সম্পর্কে জানুন

শুষ্ক মৌসুমে জমিতে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি নিকাশের জন্য নালা কেটে দিতে হবে। চারা অতি লম্বা হলে ৩০ সেমি রেখে আগার পাতা সমান করে কেটে দিতে হবে।  আগাছা মুক্ত রাখতে হবে আনারসের জমি ।

আনারস ফসলে তেমন কোনো ক্ষতিকর পোকামাকড় ও রোগ সহজে আক্রমণ করে না। তাই বালাই ব্যবস্থাপনা আলোচনা করা হলো না।

ফল সংগ্রহ  সম্পর্কে জানুন

চারার বয়স ১৫/১৬ মাস হলে মাঘ মাস থেকে চৈত্র মমাস পর্যন্ত সময়ে আনারসের ফুল আসা শুরু করে। জ্যৈষ্ঠ থেকে ভাদ্র পর্যন্ত সময়ে আনারস পাকে। গাছ থেকে আনারসের বোঁটা কেটে সংগ্রহ করতে হবে।

ফলন  সম্পর্কে জানুন

প্রতি হেক্টরে হানিকুইন ২০-২৫ টন এবং জায়েন্ট কিউ ৩০-৪০ টন ফলন দিয়ে থাকে।

শেষ মন্তবঃ আনারস চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন

প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে আনারস চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আনারস চাষ পদ্ধতি এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ তাই অবশ্যই মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন আর্টিকেল আগে পড়ে নিতে হবে।

এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল পোস্ট করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url